পাক-পবিত্রতা অর্জনের জন্য শরীয়তের হুকুম মত পাক পানি দিয়ে শরীরের নিদিষ্ট কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ধৌত করা ও মাথা মাসেহ্‌ করাকে অজু বলে। শরীলকে পাক করতে হলে অজু বা গোসল করা বাঞ্চনিয়। 
অজুর ফজিলত

ক্বালান নাবিয়্যু ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামা-ইজা তাওয়াজ্জাআল আবদুল মুস্‌লিমু আবিল মু'মিন ফাগাছালা ওয়াজ হাহু খারাজা মিন ওয়াজহিহী কুল্লু খাত্বায়তিন ইলাইহা বিআইনিহী মায়াল মা-য়ি আও মাআ আ-খিরী কাত্বারাতির মায়ী ফাইজা গাছালা ইয়াদাইহী খারাজা মিইয়া দাইহি কুল্লুখাতি আতিন কানা বাত্বশাতহা ইয়াদাহু মা'য়াল মায়ী, আওমায়া আ-খিরী কাত্বরাতিল মায়ী। ফাইজা গাছালা রিজলাইহী খারাজা কুল্লু খা্ত্বিয়াতিন মাশতাহারিজালাহু মায়াল মায়ী, আও মায়া আ-খিরী ক্বাত্বরাতিল মায়ী। হাত্তা ইয়াখরুজা নাক্বী ইয়াম মিনাজ জুনুবী। (রাওয়াহুল মুসলিম)
অর্থ : নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-মু'মিন মুসলমান বান্দা যখন অজু করে তখন তার মুখ ধৌত করার সময় পানির সঙ্গে চক্ষের কৃত যাবতীয় গুনাহ ঝরে যায়। হাত ধুইবার সময় হাতের দ্বারা কৃত গুনাহসমূহ পানির সঙ্গে ঝরে যায়। পা ধৌত করার সময় পদার্জিত যাবতীয় গুনাহ পানির সঙ্গে ঝরে যায়। এভাবে ঐ বান্দা সকল গুনাহ হতে পবিত্র হয়ে যায়। (মুসলিম শরীফ)
অন্য হাদীসে আছে-
ওয়া ক্বালা আ'লাইহিছছালামু, ইন্না উম্মাতি ইয়াদউনা ইয়াওমাল কি-ইয়ামাতি গুররাম মুহাজ্জিলিন মিন আছা রির াজুয়ী ফামানিছ তাত্বয়া আইয়্যু ত্বিলা গুররা তাহু, ফাল ইয়াফ্‌ আ'ল। (রাওয়াহুর বুখারী)
অর্থ : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্রাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন যখন আমার উম্মতকে ডাকা হবে, তখন তারা তাদের চাকচিক্যপূর্ণ অজুর অঙ্গগুলো নিয়ে হাজির হবে। অতএব যারা অধিক চাকচিক্যময় স্থান করতে চাও তারা অজুর দ্বারা করতে পার। (বুখারী শরীফ)
ওয়া আ'নহু আ'লাইহীছছালামু, মান তাওয়াজ্জাআ আ'লা তুহ্‌রী কুতিবা লাহু আ'শারু হাছানাতিন। (রাওয়াহুত তিরমিযী)
অর্থ : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পবিত্রাবস্থায় পুনরায় অজু করবে তার জন্য দশটি নেকী লেখা হবে। (তিরমিযী শরীফ)

অজু চার প্রকার

(১) নামাজ পড়ার জন্য অজু করা ফরজ। 
(২) জানাজার নামাজ, কাবা শরীফের তাওয়াফ, কুরআন শরীফ স্পর্শ করার ও সূরা-দোয়া ইত্যাদি লেখার জন্য অজু করা ওয়াজিব। 
(৩) ফরজ গোস্‌লের পূর্বে অজু করা সুন্নাত। 
(৪) সব সময় পবিত্র থাকার জন্য অজু করা মুস্তাহাব।

অজুর নিয়ত

নাওয়াইতু আন আতা ওয়াজ্জায়া লিরাফয়িল হাদাছি, ওয়াস্‌তি বাহাতাললিছছলাতি ওয়া তাকাররুবান ইল্রাল্লাহি তা'য়ালা।
অর্থ : আমি পবিত্রতা অর্জন, নামাজ আদায় ও আল্লাহ তা'য়ালার নৈকট্য লাভ করার জন্য অজু করছি।
অজুর দোয়া

বিছমিল্লা-হিল আ'লিয়্যিল আ'জীম, আল্‌হামদু লিল্রাহি আ'লা দ্বিনীল ইসলাম। আল ইসলামু হাক্‌কুও ওয়াল কুফরু বাতিলুন। আল ইসলামু নূরুও ওয়াল কুফরু জুলম্যতুন।
অর্থ : মহান স্রষ্টা আল্রাহ্‌ পাকের নামে আরম্ভ করছি। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা'য়ালারই জন্য যিনি আমাকে দ্বীন ইসলামের উপর রেখেছেন। ইসলাম সত্য ও সঠিক এবং কুফুরি মিথ্যা। ইসলাম আলোকময় এবং কুফুরি অন্ধকারাচ্ছন্ন।
বিছমিল্লাহ ও দোয়া পড়ে অজু শুরু করবে। প্রথমে দুই হাতের কজি পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিবে, তারপর তিনবার কুলি করবে, তারপর মেছওয়াক করবে। কেননা মেছওয়াক করা সুন্নাত। মেছওয়াক করে অজু করে নামাজ পড়লে ৭০ (সত্তর) গুণ নেকী বেশী পাওয়া যাবে।
হাদীসে আছে-
ক্বালান নাবীয়্যু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম লাওলা আন আশুক্কা আ'লা উম্মাতি লা আমারতুহুম বিছছিওয়াকি ই'নদা কুল্লি অজুয়ী। (বুখারী)
অর্থ : নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উম্মতের উপর কঠিন হওয়ার ভয় না থাকলে আমি প্রত্যেক অজুর সময় মিছওয়াক করা ওয়াজিব বা ফরজ করে দিতাম। (বুখারী শরীফ)
অজুতে চার ফরজ

১। সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত করা।
২। দুই হাতের কনুইসহ ধৌত করা।
৩। মাথা মাছেহ করা।
৪। দুই পায়ের টাখনুসহ ধৌত করা। 
একবার করে ধৌত করা ফরজ।

অজুতে ১২ টি সুন্নাত

১। অজুর নিয়ত করা। 
২। বিছমিলালাহ ও দোয়া পড়া। 
৩। দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা।
৪। মিছওয়াক করা।
৫। গড় গড়ার সাথে তিনবার কুলি করা।
৬। নাকে তিনবার পানি দেয়া।
৭। প্রত্যেক অঙ্গকে তিনবার করে ধৌত করা। 
৮। প্রথমে ডান দিক হতে ধৌত করা।
৯। হাত ও পায়ের আঙ্গুলসমূহ খেলাল করা। 
১০। সমস্ত মাথা একবার মাছেহ করা। 
১১। এক অঙ্গ শুকাবার পূর্বে অন্য অঙ্গ ধৌত করা।
১২। কোন অঙ্গে যেন পশম পরিমাণ জায়গা শুকনা না থাকে সে দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা।



অজুতে ৯টি মুস্তাহাব

১. দুনিয়াবী কথা বার্তা হতে বিরত থাকা। 
২. তরতীবের সাথে অজু করা, আগে-পরে না করা।
৩. কান ও ঘাড় মাছেহ করা।
৪. দাড়ি খেলাল করা।
৫. অপরের সাহায্য না নেওয়া। 
৬. কেবলামুখী হয়ে বসে অজু করা।
৭. পবিত্র ও উচুস্থানে বসে অজু করা।
৮. উভয় কানের ছিদ্রে শাহাদাত আঙ্গুল প্রবেশ করান।

৯. অজুর শেষে কালিমায়ে শাহাদাত ও দোয়া পাঠ করা এবং সূরা ক্বদর পাঠ করা।
Next
This is the most recent post.
Older Post

0 comments:

Post a Comment