
বিশেষতঃ
অন্যান্য ধর্মগুলির যেমন ব্যক্তিগত বা আঞ্চলিক বা বংশগত নামে নামকরণ করা হইয়াছে, ইসলামে ধর্মের নামকরণের বেলায় তেমন কোন ব্যক্তিগত বংশগত বা
অঞ্চলগত নামে নামকৃত করা হয় নাই। বরং উহার সাধারণ গুণগত নামেই নামকরণ করা হইয়াছে। অনুরূপভা্বে
হিজরী সনকেও সত্যের জন্য ঘরবাড়ী, জায়গা-জমিন,
বিষয়-সম্পত্তি, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব যথাসর্বস্ব ত্যাগরূপ মহৎ গুণের স্মৃতিমূলক নাম রাখা হইযাছে। কোন ব্যক্তি-বিশেষের বা মৃত্যুর সহিত সম্বন্ধ
রাখিয়া নাম রাখা হয় নাই।
হিজরী
সনের প্রথম মাস 'মুহাররাম'। এই মাসের ১০ই রাত্রিকে আশুরার রাত্রে
বলা হয়। এই দিনটির অনেক ফযীলত আছে। এই দিনে হযরত আদম আলাইহিস্সালামের তওবা কবূল হয়।
এই দিনে হযরত ইউনুস
আলাইহিস্সালামের কওমের তওবা কবূল হয়। এই দিনে হযরত নূহ্
আলাইহিস্সালামের জাহাজ মহাপ্লাবন হইতে
মু্ক্তি লাভপূর্বক জুদী পাহাড়ে আসিয়া লাগে। এই দিনে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম জন্মলাভ
করেন। এই দিনেই হযরত ঈসা আলাইহিস্সালাম আল্লাহ্র অসীম কুদরতে বাপের ঔরস
ব্যতীত মাতৃগর্ভ হইতে জন্মলাভ করেন। এই সমস্ত কারণে আশুরার রাত্রির ফযীলত অনেক
বেশী। এই দিনে
রোযা রাখিলে ও দান খয়রাত করিলে অশেষ নেকী ও ছওয়াব পাওয়া যায়। ইহা পূর্ব হইতেই প্রমাণিত
আছে।

মাসআলাঃ নবী করিম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা পালন করছে।
নবীজী বললেন, এটি কি? তারা বলল, এটি একটি ভাল দিন। এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলকে তাদের দুশমনের
কবল থেকে বাঁচিয়েছেন।
তাই মুসা আ. রোজা পালন করেছেন। রাসূলুল্লাহ বললেন, মুসাকে অনুসরণের
ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। অত:পর তিনি রোজা রেখেছেন এবং রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।{বোখারি:১৮৬৫}
যখন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা রাখলেন এবং (অন্যদেরকে) রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।
লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল!
এটিতো এমন দিন, যাকে ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা
বড় জ্ঞান করে, সম্মান জানায়। তখন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আগামী
বছর এদিন আসলে, আমরা নবম দিনও রোজা রাখব
ইনশাল্লাহ। বর্ণনাকারী বলছেন, আগামী
বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয়ে
গিয়েছে। {সহিহ মুসলিম:১৯১৪৬}
0 comments:
Post a Comment